ক্রেডিট কার্ডের চার্জ কমানোর উপায় | How to Minimize Credit Card Fees and Charges

ক্রেডিট কার্ডের চার্জ কমানোর উপায় | How to Minimize Credit Card Fees and Charges


উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশ বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে প্রাথমিক ধাপ পার করছে।ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার অনেক সুবিধা দিলেও, তার সাথে কিছু অতিরিক্ত খরচও যুক্ত থাকে, যেমন বার্ষিক ফি, সুদ, এবং অন্যান্য খরচ। তবে কিছু কৌশল রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের চার্জ কমাতে পারেন এবং সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহার করতে পারেন।

সময়মতো বিল পরিশোধ করুন

ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় খরচ হচ্ছে সুদ (ইন্টারেস্ট)। যদি আপনি বিল সময়মতো পরিশোধ করেন, তাহলে সুদ চার্জ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। যে কোন বিলের পরিমাণ যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করা হয়, তবে এর উপর সুদ আরোপ করা হয়, যা আপনাকে অতিরিক্ত খরচের মুখে ফেলে দেয়।

বার্ষিক ফি মওকুফের সুযোগ ব্যবহার করুন

অনেক ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের প্রথম বছরে ক্রেডিট কার্ডের বার্ষিক ফি মওকুফ করে দেয়। এছাড়া, যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ খরচ করেন বা নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করেন, তবে তারা এই ফি মওকুফ করে দিতে পারে। তাই, সেসব সুবিধার দিকে নজর রাখুন।

ক্যাশব্যাক বা রিওয়ার্ড পয়েন্ট ব্যবহার করুন

অনেক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ক্যাশব্যাক বা রিওয়ার্ড পয়েন্ট অর্জন করা যায়। এই পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাকগুলো পরবর্তীতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যার মাধ্যমে আপনি কিছু খরচ কমাতে পারবেন। রিওয়ার্ড এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আপনার কার্ডের মোট খরচ কমানো সম্ভব।

অনলাইনে বা অফলাইনে ডিল এবং ডিসকাউন্ট ব্যবহার করুন

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন অনলাইন শপিং সাইট এবং অফলাইন দোকানগুলোতে ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। আপনি যদি এই ডিসকাউন্ট সুযোগগুলো ব্যবহার করেন, তবে ক্রেডিট কার্ডের খরচ কমাতে পারবেন। বিভিন্ন ব্যাংক ও সংস্থা তাদের গ্রাহকদের জন্য এক্সক্লুসিভ ডিসকাউন্ট অফার করে থাকে, যেগুলো থেকে লাভবান হওয়া যায়।

রেগুলার পেমেন্টগুলো কার্ডের মাধ্যমে করার অভ্যাস করুন

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক প্রয়োজনীয় লেনদেন আমরা চাইলে সহজেই কার্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পারি। যেমন: মোবাইল রিচার্জ, ইন্টারনেট বিল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, শপিংমলে কেনাকাটা ইত্যাদি। এসব খরচ যদি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে করা হয়, তাহলে একদিকে যেমন প্রতি লেনদেনে রিওয়ার্ড পয়েন্ট জমা হবে, অন্যদিকে একটি সক্রিয় ও শক্তিশালী ইউজার প্রোফাইল তৈরি হবে। এই প্রোফাইল ভবিষ্যতে আপনাকে ব্যাংক কিংবা সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা বা রিওয়ার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। ফলে আপনি যেসব খরচ নিয়মিত করছেন, সেগুলো থেকেই ভবিষ্যতে বিভিন্ন ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক বা এক্সট্রা বেনিফিট পেতে পারেন, যা আপনার কার্ড ব্যবহারকে আরও সাশ্রয়ী ও লাভজনক করে তুলবে।

ফি ও চার্জগুলো পর্যালোচনা করুন

অনেক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন চার্জ ধার্য করে থাকে, যেমন লেট পেমেন্ট ফি, ব্যালেন্স ট্রান্সফার ফি, ইত্যাদি। এই চার্জগুলো কমানোর বা বন্ধ করার জন্য আপনি ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। কিছু ব্যাংক এই চার্জ কমানোর সুযোগ দেয় যদি আপনি তাদের সাথে একটি সুপারিশকৃত লেনদেন বা শর্ত পূরণ করেন।

অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন

যতটা সম্ভব, প্রয়োজনীয় খরচের বাইরে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত খরচ থেকে মুক্ত থাকতে, আপনার খরচের পরিকল্পনা করে এটি সীমিত রাখুন। এইভাবে, আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ড বিল ও সুদের খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

কার্ডের গতি বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করুন

প্রতি মাসে আপনার কার্ডের বিল নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করুন। যদি কোনো অস্বাভাবিক বা অসঙ্গত লেনদেন চোখে পড়ে, তাহলে দ্রুতই আপনার কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। অপ্রত্যাশিত চার্জ বা ফি দেখা গেলে, ব্যাংকের সাপোর্ট টিমের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার সমাধান করার চেষ্টা করুন। এ ধরনের সচেতনতা আপনাকে আর্থিকভাবে সুরক্ষিত রাখবে এবং ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা থেকে রক্ষা করবে।

সুতরাং, ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে যদি সঠিক কৌশল অবলম্বন করা হয়, তবে আপনি তার উপর খরচ কমিয়ে ফেলতে পারবেন। তাই, সুদ, ফি, এবং অন্যান্য চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

নবীনতর পূর্বতন