ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড কার্ড | Dutch-Bangla Bank Prepaid Card

ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড কার্ড | Dutch-Bangla Bank Prepaid Card


বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বেসরকারি ব্যাংক ডাচ-বাংলা ব্যাংক, বিশেষ করে তাদের বিস্তৃত এটিএম নেটওয়ার্কের কারণে গ্রাহকদের কাছে খুবই সমাদৃত। এই ব্যাংক ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি প্রিপেইড কার্ডও অফার করে, যা “ট্রাভেল কার্ড” নামে পরিচিত। এটি একটি ডুয়েল কারেন্সি কার্ড, অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকা (BDT) এবং বৈদেশিক মুদ্রা (USD) – উভয় মুদ্রায় লেনদেনের সুযোগ রয়েছে।


ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ট্রাভেল কার্ড ভিসা ও মাস্টারকার্ড উভয় নেটওয়ার্কেই ইস্যু করা হয় এবং এটি এনএফসি (NFC) প্রযুক্তি সমর্থিত, ফলে আপনি কনট্যাক্টলেস পেমেন্টও করতে পারবেন। এই কার্ডের এককালীন ইস্যু ফি মাত্র ৫০০ টাকা এবং ভ্যাটসহ মোট ৫৭৫ টাকা। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই কার্ডে এখনো পর্যন্ত কোনো বাৎসরিক চার্জ বা এসএমএস এলার্ট ফি নেই, যা একে অন্যান্য প্রিপেইড কার্ডের তুলনায় বেশ সাশ্রয়ী করে তোলে।
বাংলাদেশে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের যেকোনো এটিএম বা সিআরএম (Cash Recycling Machine) থেকে বিনামূল্যে টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়া যায়। তবে অন্য ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুললে ২% অথবা ন্যূনতম ১০০ টাকা চার্জ পরিশোধ করতে হয়, যা প্রিপেইড কার্ডের ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি।


এই কার্ডে গ্লোবাল লিমিট বা ডাইনামিক কারেন্সি কনভারশন (DCC) সুবিধা নেই, অর্থাৎ বিডিটি এবং ইউএসডি আলাদা আলাদা হিসাবে লোড করতে হয়। বৈদেশিক লেনদেনের জন্য প্রথমে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখায় গিয়ে বৈধ পাসপোর্ট আবেদন করে ট্রাভেল কোটার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা অংশে টাকা জমা দিতে হয়। এরপর USD ব্যালেন্স ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক লেনদেন করা সম্ভব হয়।

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের নেক্সাসপে অ্যাপের মাধ্যমে এই প্রিপেইড কার্ড অ্যাড করে ব্যবহার করা যায়। এতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট থেকে সরাসরি বিল পেমেন্ট করে ব্যালেন্স রিলোডিং করা যায় এবং অন্যান্য ব্যাংকে ফান্ড ট্রান্সফারও করা যায়।

সার্বিকভাবে, ট্রাভেল বা প্রিপেইড কার্ড হিসেবে এটি একটি কার্যকর ও সুবিধাজনক বিকল্প, বিশেষ করে তাদের জন্য যারা এককালীন ইস্যু ফি দিয়ে বিদেশ ভ্রমণের সময় বা অনলাইন কেনাকাটার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য কার্ড খুঁজছেন। তবে কিছু সীমাবদ্ধতা যেমন ডুয়েল কারেন্সি লোডের ঝামেলা এবং অন্য ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তোলার অতিরিক্ত চার্জ মাথায় রেখে ব্যবহার করা উচিত।

আবেদনের ধাপ | Dutch-Bangla Bank Travel Card Application Process


ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ট্রাভেল কার্ড বা প্রিপেইড কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া একেবারে ম্যানুয়াল। আপনাকে সরাসরি স্বশরীরে যেকোনো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের শাখা, উপশাখা অথবা ফার্স্ট ট্র্যাক বুথে গিয়ে আবেদন করতে হবে। নিচে ধাপে ধাপে আবেদনের প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো:

ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড কার্ডের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:


১। ব্যাংকের নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

২। জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) ফটোকপি।

৩। সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।

৪। বর্তমান ঠিকানার ইউটিলিটি বিলের (বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি বা টেলিফোন) একটি কপি।

৫। আয়ের উৎসের দলিল বা পেশার প্রমাণ (যেমন: অফিস আইডি, চাকরির সনদ, ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি)।

৬। পাসপোর্ট (যদি আপনি ডুয়েল কারেন্সি সুবিধা সহ আন্তর্জাতিক লেনদেন করতে চান)।

ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড কার্ড আবেদনের ফি জমাদান পদ্ধতি:
এককালীন ফি ৫০০ টাকা এবং ভ্যাটসহ মোট ৫৭৫ টাকা ক্যাশ ডিপোজিট করতে হবে আবেদনকালেই।

⏳ কার্ড ইস্যু ও সংগ্রহ:

আবেদন জমা দেওয়ার পর সাধারণত ১০ থেকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কার্ড প্রস্তুত হয়। শাখা বা ফার্স্ট ট্র্যাক বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আপনাকে কার্ড প্রস্তুতির তথ্য জানিয়ে দিবেন। তবে কার্ডটি, নির্দিষ্ট বুথ বা শাখা থেকে আপনাকে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এখনো পর্যন্ত কুরিয়ারের মাধ্যমে এই কার্ড ডেলিভারি সিস্টেম চালু হয়নি

ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড কার্ড কার্ড অ্যাক্টিভেশন প্রসেস:


কার্ড সংগ্রহের পর তাৎক্ষণিকভাবে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কল সেন্টারে (১৬২১৬) কল দিয়ে কার্ড অ্যাক্টিভ করতে পারবেন। অথবা শাখায় গিয়ে নির্ধারিত ফর্মে স্বাক্ষর করে ব্যাংক কর্মকর্তার মাধ্যমে সরাসরি কার্ড অ্যাক্টিভ করেও নিতে পারবেন।

এই আবেদন প্রক্রিয়াটি কিছু একটা জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হলেও যেকোনো সচেতন গ্রাহক খুব সহজেই ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এই প্রিপেইড কার্ড ব্যবহার শুরু করতে পারেন। বিশেষত যাদের নিয়মিত আন্তর্জাতিক ট্রান্সেকশন বা ভ্রমণের প্রয়োজন হয়, তাদের জন্য এটি একটি উপযোগী সমাধান।

ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড কার্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতো যে কোন সময় কল করুন ডাচ বাংলা ব্যাংক কল সেন্টারে। ডাচ বাংলা ব্যাংক কল সেন্টারে যোগাযোগের তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন....

নবীনতর পূর্বতন